শেরপুরে দাফনের দেড় মাস পর আদালতের নির্দেশে লিটন মিয়া ওরফে হিটলার (৪৫) নামে এক মাছ ব্যবসায়ীর লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ১৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের যোগিনীমুড়া কান্দাপাড়া গ্রামে জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সালাউদ্দিন বিশ্বাসের উপস্থিতিতে ওই লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত হিটলার ওই গ্রামের মৃত হাসেন আলী মন্ডলের ছেলে ও তিন কন্যা সন্তানের জনক। এদিকে প্রতিপক্ষের চুরির শঙ্কায় গত দেড় মাস যাবত কবরস্থানটি পাহারা দিয়ে রেখেছিলেন স্বজনরা।
ওই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশ, নিহতের স্বজন ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২ অক্টোবর রাতে লিটন মিয়া হিটলারকে নিজ বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় স্থানীয় মৃত সেকান্দর আলীর ছেলে মো. শহীদুল ইসলাম শুভ, মৃত মোশারফ হোসেনের ছেলে আব্দুল মতিনসহ তার সহযোগীরা। পরদিন সকালে স্থানীয় মসজিদের সামনে পাওয়া যায় হিটলারের লাশ। পরে অভিযুক্তরা হিটলারের স্ট্রোক করে মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করে তার লাশ তড়িঘড়ি করে দাফন করে। পরবর্তীতে হিটলারের স্বজনরা জানতে পারেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে শহিদুল ইসলাম শুভসহ কয়েকজন মিলে হিটলারকে হত্যা করে মসজিদের সামনে ফেলে রাখা হয়। পরে হিটলারের ভাতিজা আবির ইসলাম বাদী হয়ে মৃত সেকান্দর আলীর ছেলে মো. শহীদুল ইসলাম শুভ, মৃত মোশারফ হোসেনের ছেলে আব্দুল মতিন, মৃত আব্দুর রশীদের ছেলে মো. ফিরোজ মিয়া (৩০), মো. রহুল আমীন (৪০), সেকান্দর আলীর ছেলে মো. চঞ্চল মিয়া (৪৫), মৃত মোশারফ হোসেনের ছেলে মো. মমিনুল ইসলাম (৪৫)সহ ৭জনকে আসামি করে ৩০ অক্টোবর আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে সদর থানা পুলিশকে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয় আদালত।
পরে পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত হিটলারের মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত ও সুরতহাল রিপোর্ট করার নির্দেশ দেয়। ওই নির্দেশের প্রেক্ষিতে পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মঙ্গলবার দুপুরে কবর থেকে হিটলারের মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
এদিকে আদালতে মামলা করার পর থেকেই হিটলারের লাশ কবর থেকে চুরির ভয়ে গত দেড়মাস ধরে পাহারা দিচ্ছিল তার স্বজনরা।
নিহতের স্ত্রী তাছলিমা বেগম বলেন, আমার স্বামীকে বাড়ি থেকে ডাইকা নিয়া তারা মাইরা ফেলছে। আমার ৩টি মেয়েকে যারা এতিম করেছে, আমি তাদের ফাঁসি চাই।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এসএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী মরদেহের উত্তোলনের পর ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্টের আলোকেই পরবর্তী প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।